আজ ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

অবশেষে একাধিক মামলায় আটক হলেন, হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হক

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজধানীর মোহাম্মাদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসা থেকে দুপুর ১২টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

নরেন্দ্র মোদির সফরের সময় ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত সহিংসতায় দেশে ১৭ জনের মৃত্যুর হয়। এসব সহিংসতার ঘটনায় সারাদেশে প্রায় অর্ধশতাধিক মামলা হয়েছে। এসব ঘটনার মূল ইন্ধনদাতা হিসেবে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের দিকেই সন্দেহের তীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।

গ্রেপ্তারের পর মামুনুলকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনারের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশীদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মোহাম্মদপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে আমার কার্যালয়ে রয়েছেন।’মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা যায়, ২৬ মার্চ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সহিংসতার ঘটনায় গত ৫ এপ্রিল হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় ২ হাজার ব্যক্তিকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উপ-দফতর সম্পাদক খন্দকার আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে পল্টন থানায় মামলাটি করেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর সাম্প্রতিক সহিংসতা ও রিসোর্টকাণ্ডে রাজধানীর পল্টন থানা ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় দুটি মামলা হয়েছে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে। এছাড়া, ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর তাণ্ডবের ঘটনাতেও তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে। এসব মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়ে থাকতে পারে বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি মামুনুল হক সব থেকে বেশি আলোচিত হন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়াল রিসোর্টে এক নারীসহ অবরুদ্ধ হওয়াকে কেন্দ্র করে। মামুনুল হল দাবি করেন ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। গত ৩ এপ্রিল মামুনুল হকের অবরুদ্ধের ঘটনায় তার সমর্থকরা ব্যাপক ভাঙচুর চালায় রিসোর্টটিতে।

ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) রাতে সোনারগাঁ থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। দুটি মামলা পুলিশ বাদী ও অপর মামলাটির বাদী আহত এক সাংবাদিক । এই তিন মামলার মধ্যে একটি মামলায় মামুনুল হককে প্রধান আসামিসহ ৮৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় আরও ৬শ’ জনকে ‘অজ্ঞাতনামা’ হিসেবে আসামি করা হয়েছে।

অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জের ঘটনার পর থেকে একের পর এক মাওলানা মামুনুল হকের কণ্ঠের মতো অডিও ফাঁস হয়। এসব অডিও ইতোমধ্যে সামাজিকমাধ্যম ইউটিউব ও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এসব অডিওতে যে কণ্ঠ উঠে এসেছে তা মামুনুল হকের কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এছাড়া অডিও ফাঁস হয়েছে সেটি রিসোর্টে অবরুদ্ধ নারী জান্নাত আর তার প্রথম স্ত্রীর কি না নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এছাড়াও  মামুনুল হকের দাবি করা তার ‘দ্বিতীয় স্ত্রী’ ছেলে আব্দুর রহমান সোমবার (৫ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে  ও গণমাধ্যমে তার মা ও মামুনুল হককে নিয়ে মুখ খোলেন।  যা মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়।  তিনি তার মা নিখোঁজ এই মর্মে পল্টন থানায় একটি জিডি  করেন।

অন্যদিকেমো. শাহজাহান নামে এক ব্যক্তি নিজের বোনকে মামুনুল হকের স্ত্রী দাবি করে, তার  বোন জান্নাতুল ফেরদৌস ওরফে লিপি নিখোঁজ রয়েছেন এই মর্মে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায়  ১১ এপ্রিল একটি সাধারণ ডাইরি (জিডি) করেছেন।

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap